Header Ads


অন্যতম আরও কয়েকজন দ্বীনের খাদিম তথা দ্বীনের মোজাহিদ, আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলা (রঃ) এর হৃদয়ের মনিকোঠায় ছিল যাদের স্থান, তাঁরা অনেকেই আজ আমাদের কাছ থেকে মাওলার সান্নিধ্যে চলে গেছেন। তাঁরা হলেন, হযরত মাওঃ আব্দুর রউফ (রঃ), হযরত মাওঃ হাফিজ মোজাহির উদ্দিন (রঃ), আলহাজ্ব মোঃ আরফান মিয়া, মোঃ ফটিক মিয়া, মাওঃ আব্দুর রহমান ছানাওর (রঃ) সহ নাম না জানা আরও অনেক সিপাহ সালার। তাঁদের অন্তিম মুহুর্ত পর্যন্ত তাঁদের কাছে ইসলামী খেদমতের যে কোন বিষয়ে গেলে তাঁরা যে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতেন তা বলা বাহুল্য। উসলামের খেদমতে নিয়োজিত সৈনিকগণ, যে কোন সমস্যা বিপদাপদে তাঁদের কাছে গেলে যে শান্তনা বা সহযোগীতা করতেন, আজ সেই মানুষগুলো আমাদের কাছ থেকে চলে গেছেন, মনে হলে চোখে জ্বল আটকিয়ে রাখার মত কোন সাধ্য নেই। একটি সন্তান যেভাবে কোন বিপদের সম্মুখীন হলে তাঁর বাবার কাছে আশ্রয় নেয় এবং বাবা যে ভাবে তাকে স্নেহের পরশ দিয়ে সব কিছু ভুলিয়ে দেয়, তেমনি তারাও ছিলেন।

তাঁর মধ্যে যাঁদের কথা আমি একটু আলাদা না বলে পারছি না-{(আমি যাদের জীবদ্দশায় যাদের কাছে বেশি গিয়েছি) (অন্যান্য সিপাহ সালার গণের অনেককেই জীবিত পাইনি। অনেককে জীবিত পেলেও আমার সময়ে আমি তাঁদেরকে সুস্থ পাইনি বিধায় তাদের সান্নিধ্যে যাওয়ার মত সৌভাগ্য আমার হয়নি)} তারা হলেন, আলহাজ্ব মোঃ আরফান মিয়া, হাফিজ মাওঃ মোজাহির উদ্দিন (রঃ) এবং মাওঃ আব্দুর রউফ (রঃ)।তাঁদের মধ্য থেকেও যিনি আমাকে সবসময় নিজের সন্তানদের মত ভালোবাসতেন এবং কোন বিষয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তিনি বাবা যেমন তার সন্তানকে শান্তনা দেয়, তেমনি তিনি সন্তানের মত শান্ত দিতেন। উনার ঋণ আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কোন শোধ করতে পারব না। আজ উনার কথা লিখতে গিয়ে আমি আর চোখে জ্বল আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। নিজের অজান্তেই চুখে পানি এসে গেল। আল্লাহ উনাদের প্রত্যেকে জান্নাতের সু-উচ্চ মাকাম যেন দান করেন। আমিন।

যাই হোক মূল কথা হল, উনাদের জীবনী দিয়ে একটি গ্রন্থ রচনা করা খুবই জরুরী। না আগামী দিনের বেড়ে উঠা সৈনিকদের কাছে তাঁদের কথা অজানা থেকে যাবে।

যারা দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিতে গিয়ে সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছেন, আলহাজ্ব মোঃ আরফান সাহেবের বেশি সান্নিধ্য পাওয়ায় উনার বিষয়টি আমার একটু বেশি জানা। উনি উনার জীবদ্দশায় আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলা (রঃ) এর রেখে যাওয়া কোরআনের খেদমতে নিজেকে যেভাবে বিলিয়ে দিয়েছেন, উনি উনার জীবদ্দশায় আমার জানামতে ৭টি দারুল ক্বিরাতের শাখা নিজে পারিচালনা করে গেছেন। তার মধ্যে ৪টি শাখার যাবতীয় খরচ উনি নিজে বহন করেছেন। এছাড়া উনি অনেক মাদরাসাও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, যা অনেকেরই আজানা। উনি একটি হাফিজিয়া মাদরাসা সম্পূর্ণ নিজের খরচে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন এমনকি উনার জীবনের প্রায় শেষ প্রান্ত পর্যন্ত উনি ১০জন ছাত্রের খাবারের ব্যবস্থাও উনার নিজের তহবিল থেকে করতেন, উনার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা ছাড়াও আরও ২-৩টি হাফিজিয়া মাদরাসায় উনার খেদমত ছিল নিরলসভাবে। এছাড়া উনি দুর্গমা পাহাড়ে যেখানে চারদিকে শুধু বিধর্মীদের বসবাস, সেখানে মসজিদ নির্মাণ করে দিয়ে নিজে ইমাম সাহেবের বেতন দিয়ে দুর্গম পাহাড়ে অবস্থানরত মুসলমানদের নামাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। (যা আমি নিজেও জেনেছি উনার মৃত্যু পর) তাছাড়া আরও কত খেদমত যে করে গেছেন, ফেবুতে লিখে শেষ করার মত নয়। উনার মৃত্যুর আগের দিনে উনি উনার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসার পাশে নিজের কবরের স্থান নির্ধারণ করে কবরের জায়গাটি মাটি ভরাট করে কবরের জন্য প্রস্তুত করে উনি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যান। ঢাকা চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় উনি ইন্তেকাল করেন এবং পরম করুনাময় মহান রবের সান্নিধ্যে পরপারে চলে যান। উনি যে, আল্লাহর একজন খাটি বান্দা এবং মুমিন বান্দা ছিলেন তার কোন সন্দেহ নেই উনি আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলা (রঃ) প্রতিটি খেদমতে নিরলস খেদমত করে গেছেন। যার সারাটি জীবন ছিল রাসুল প্রেমে উদ্ভাসিত। উনার অসিয়ত মোতাবেক উনাকে উনার প্রতিষ্ঠিত হাফিজিয়া মাদরাসার পাশেই দাফন করা হয়েছে।

প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা ইতিহাস ঐতিহ্য

সবার ইতিহাস আমার জানা নেই এমনকি আমার অজানা অনেকের নামও হয়তো এখানে আসেনি। সে জন্য আমি দুঃখিত। যদি কারও নাম আমার অজান্তে বাকী থাকে সেজন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী। লেখায় শাব্দিক, ব্যাকরণ এবং কাঠামোগত কোন ভুল থাকলে ক্ষমা করে দিবেন।

পরিশেষে শ্রীমঙ্গলের গুনিজনের কাছে আমার অনুরোধ

উনাদের জীবনী নিয়ে একটি ইতিহাস তথা গ্রন্থ রচনা করা অত্যন্ত জরুরী। বিধায় গুনীজনদের কাছে বিনীত অনুরোধ উনাদের ইতিহাস যেন গ্রান্থাকারে প্রকাশ করা হয়। না হলে অদুঢ় ভবিষ্যতে শ্রীমঙ্গলের সন্তানরা তাঁদের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে না।বিঃ দ্রঃ লেখা কপি করবেন না। শেয়ার করার অনুরোধ করছি।প্রত্যেকের জীবনী সম্পর্কে যতটুকু জানা আছে ধারাবহিক লিখার চেষ্ঠা করব। ইন শা আল্লাহ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন এই সীপাহ সালার, দ্বীনের মোজাহিদদেরকে জান্নাতের সু-উচ্চ মাকাম দান করেন। আমিন।

শাহ্ মোঃ আব্দুল আজিম

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

No comments

Theme images by ImagesbyTrista. Powered by Blogger.