বিলীন হয়ে যাচ্ছে শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জের মাদরাসা শিক্ষা
বিলীন হয়ে যাচ্ছে শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জের মাদরাসা শিক্ষা
ষ্টাপ রিপোর্টার
মৌলভীবাজার জেলার অন্যতম একটি উপজেলা হচ্ছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিভিন্ন ধরণের ছোট বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাদরাসা শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখছে শ্রীমঙ্গল আনওয়ারুল উলুম ফাদ্বিল (ডিগ্রি) মাদরাসা, সিরাজনগর গাউছিয়া মমতাজিয়া ফাদ্বিল (ডিগ্রি) মাদরাসা, সাতগাঁও সামাদিয়া আলিম মাদরাসা, ডোবাগাঁও বাহরুল উলুম দাখিল মাদরাসা। এই মাদরাসাগুলোর আলিম এবং ফাদ্বিল (সম্মান) শ্রেণির পরীক্ষার সেন্টার কমলগঞ্জে অবস্থিত সাফাত আলী সিনিয়র ফাদ্বিল মাদরাসা। জানা যায়, সেখানে নাম মাত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে পরীক্ষা চলাকালীন কমলগ্ঞজ মাদরাসার প্রিন্সিপাল থেকে শুরু করে প্রত্যেক শিক্ষক ঘুষের মাধ্যমে ছাত্রদেরকে নকল করার সুযোগ করে দেন। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ফাদ্বিল পরীক্ষার সময় সেখানে প্রথম পরীক্ষার দিন খুবই গুরুত্ব দিয়ে নকল বিহীন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পরীক্ষার দিন কমলগঞ্জ মৎস অফিসার সহ তিন জন অফিসার উপস্থিত থেকে নকল বিহীন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করতে বাধ্য করেন। কিন্তু দিব্তীয় পরীক্ষার দিন দেখা যায়, বিরল পরিস্থিতি। সেখানে প্রথম দিন যে হল রুমে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই হল রুমে শুধু শ্রীমঙ্গল আনওয়ারুল উলুম ফাদ্বিল মাদরাসা এবং সিরাজনগর গাউছিয়া মমতাজিয়া ফাদ্বিল মাদরাসার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও কমলগঞ্জ সাফাত আলী সিনিয়র ফাদ্বিল মাদরাসার ছাত্রদেরকে নকলের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আলাদা অন্য হল রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। যে হল রুমটি উপজেলা মৎস অফিসার এবং অন্যান্য মেজিট্রেটগণের অজানা একটি হল রুম। সেদিন এঅবস্থা দেখে শ্রীমঙ্গল আনওয়ারুল উলুম ফাদ্বিল মাদরাসা এবং সিরাজনগর গাউছিয়া মমতাজিয়া ফাদ্বিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে শুরু করে। শিক্ষার্থী রা দাবী করে, যদি তাদের পরীক্ষা আলাদা হলে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে আমাদের পরীক্ষাও আলাদা আলাদা হলে নিতে হবে। এ সময় হল কমলগঞ্জ মাদরাসার প্রিন্সিপাল এসে প্রথম পর্যায়ে বিভিন্ন ভয়ভিতি দেখাতে শুরু করেন। শিক্ষার্থী রা ভয়ভিতী উপেক্ষা না করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থী দের দাবী পুরণের আশ্বাস দিয়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেন। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর দেখা যায় অন্য চিত্র। সেখানে ঐ মাদরাসার যে শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন, তারা উল্লেখিত দুই মাদরাসার শিক্ষার্থী কে খুব্রই নজরদারী করে পরীক্ষা নেন। উল্লেখ্য, সেদিনও তিনজন মেজিস্ট্রেট উপস্থিত হন সেই একই হলে। এবং পরীক্ষার শেষ পর্য ন্ত ঐহলে অবস্থান করেন। দ্বিতীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তাদের মাদরাসার ছাত্রদেরকে দিয়ে উল্লেখিত দুই মাদরাসার শিক্ষার্থী দের কাছ থেকে ঘুষ দাবী করেন, এবং একথা বলা হয় যে, যদি ঘুষ না দেওয়া হয় তাহলে শিক্ষার্থীদেরকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। বাধ্য হয়ে উল্লেখিত দিুই মাদরাসার শিক্ষার্থীগণ জনপ্রতি পাচ শত টাকা করে দেন। তিতীয় পরীক্ষার দিন দেখা যায়, আরও ব্যাতিক্রম ধরণের পরীক্ষা। ঘুষের টাকা হাতে পাওয়ার পর তাদের মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরকে পুনরায় আগের হলে নিয়ে আসা হয় এবং বই খুলে নকল করার সুযোগ দেওয়া হয়। এভাবে চলে পরবর্তী পরীক্ষাগুলো। এভাবে প্রতিটি পরীক্ষা যদি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে কিছু দিনের মধ্যেই মাদরাসা শিক্ষা বিলীন হয়ে যাবে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদেরকে এভাবে চাপ সৃষ্টি করে ঘুষ আদায় পরীক্ষা নেওয়া, প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিটি শিক্ষার্থী। একটি মাদরাসার প্রিন্সিপাল একজন জেনারেল শিক্ষিত শিক্ষক।
No comments